
প্রকাশিত: Thu, Mar 7, 2024 11:52 AM আপডেট: Mon, May 12, 2025 12:05 PM
[১]খনিজ সম্পদ আহরণে বালুচর লিজ চায় অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান
রওশন হাবীব, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা : [২] ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে মূল্যবান খনিজ সম্পদ আহরণে গাইবান্ধায় ২ হাজার ২৯৫ হেক্টর বালুচর লিজ চায় অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান এভার লাস্ট মিনারেল লিমিটেড । নিজ খরচে খনিজ আহরণের পর সরকারকে ৪৩ ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
[৩] কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের বালিতে ১০ মিটার গভীরতায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে আছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। যা নিশ্চিত করেছেন ইন্সটিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জির গবেষকরা।
[৪] বালির নিচে লুকিয়ে থাকা খনিজ ইলমেনাইট, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট, গারনেট ও কোয়ার্টজ অন্যতম মূল্যবান খনিজ। এসব খনিজের মধ্যে জিরকন সিরামিক, টাইলস, রিফ্যাক্টরিজ ও ছাঁচ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। রং, প্লাস্টিক, ওয়েলডিং রড, কালি, খাবার, কসমেটিকস, ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় রুটাইল। সিরিঞ্জ কাগজ উৎপাদনে ব্যবহার হয় গারনেট। চুম্বক, ইস্পাত উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে লাগে ম্যাগনেটাইট। টিটেনিয়াম মেটাল, ওয়েল্ডিং রড ও রং উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় ইলমেনাইট। আর কাচ শিল্পের অন্যতম কাচামাল কোয়ার্টজ।
[৫] ছয়টি খনিজই অত্যন্ত মূল্যবান পদার্থ। এগুলো দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। আর এটি যদি আমাদের দেশে উত্তোলন করা যায়, তাহলে প্রক্রিয়াজাত করে নিজস্ব চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ব্রহ্মপুত্র নদে জরিপের পর এসব খনিজ সম্পর্কে ধারণা পায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি।
[৬] প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান বলেন, ‘ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে এই খনিজগুলো ব্যবহার হয়। আমি মনে করি, এই খনিজ সম্পদ দেশের জন্য লাভজনক হবে।’
[৭] এদিকে বেশকিছু দিন ধরে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের ৪ হাজার হেক্টর বালুচরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি এভারলাস্ট লিমিটেড। বালাসীঘাট এলাকায় একটি প্লান্টও স্থাপন করছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার ফুলছড়ির বালাসীঘাট, সদরের মোল্লারচর এবং কামারজানি এলাকায় ২ হাজার ২৯৫ হেক্টর বালিচর লিজ চেয়ে খনিজ আহরনের আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে আহরণের পর সরকারকে ৪৩ ভাগ দেয়ার প্রস্তাব করেছে তারা। তবে এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
[৮] খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক মো. আবুল বাসার সিদ্দিক আকন বলেন, ‘চরের বালিতে যে খনিজ পদার্থ আছে, সেটি যদি আমরা আহরণ করতে পারি তাহলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি রপ্তানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবো। এটি নিয়ে মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে।’
[৯] এই অঞ্চলের বালুতে আরও দু'টি খনিজ নিয়ে গবেষণা করছে ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি। কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বালুচরে খনিজ পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালি উত্তোলন বন্ধে কোন নির্দেশনা নেই প্রশাসনের। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী